Chanchal Chowdhury movies and tv shows:সেরা চঞ্চল চৌধুরীর নাটক লিস্ট। চঞ্চল চৌধুরী ওয়েব সিরিজ। চঞ্চল চৌধুরী-এর সিনেমা এবং টিভি শো.
“অভিনয় ভালোবাসি তাই করি, নায়ক হতে চাইনি কোনোদিন,” আজ কিন্তু এই নায়ক হতে না চাওয়া ব্যক্তিটিই সকলের কাছে নায়ক। ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের মানুষের অফুরন্ত ভালবাসা কুড়িয়ে নিচ্ছে এই অভিনেতা। জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে যাকে দেখা গেছে অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খানের পাশেই। এই দৃশ্য নিঃসন্দেহে একজন বাংলাদেশীর কাছে অত্যন্ত গর্বের ও আবেগের।
বাংলাদেশের এই অভিনেতার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে এপার বাংলা ওপার বাংলার কোনায় কোনায়। এক নামেই সে আজ পরিচিত। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা এত সোজা নয়। এলাম দেখলাম অভিনয় করলাম আর ভক্তকুলের মনে জায়গা করে নিলাম ইতিহাস বলছে সেটা কখনোই হয় না। তাহলে চঞ্চলই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন? চলো এবার জেনে নেওয়া যাক চঞ্চলের অভিনয়ে আসার শুরুর কাহিনীটা।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরার এক মফসল শহরে চঞ্চলের জন্ম। তার বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী এবং মা নমিতা চৌধুরী। বাবা ছিলেন পেশায় শিক্ষক। আট ভাইবোনের পরিবারে সবথেকে ছোট ছেলে চঞ্চল। পড়াশোনা সূত্রে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে চারুকলায় ভর্তি হয় চঞ্চল। পড়াশোনায় ভালোই মেধাবী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকতে ও গান করতেও তিনি খুব ভালবাসতেন।
মঞ্চ ও টিভির সাহায্যে অভিনয়ের যাত্রার শুরু চঞ্চল চৌধুরীর
কিন্তু তাহলে তো তাঁর শিল্পী হবার কথা অভিনেতা হলেন কিভাবে?
এক সাক্ষাৎকারে চঞ্চল জানিয়েছে, পড়াশোনা চলাকালীন নিজের হাত খরচ চালানোর জন্যই সে আরণ্যক নাট্য দলে একজন ব্যাকস্টেজ কর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেয়। ওই প্রথম ১০ বছর মঞ্চের পর্দা টানা, আসবাবপত্র সরানো, সেট তৈরি করা এইসব করেছে সে ।
এরপর একদিন হঠাৎই একটা ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আসে তাঁর। এক হারমোনিয়াম বাদকের চরিত্রে তার সেই দুর্দান্ত অভিনয় দর্শকের মনে জায়গা করে নেয়। ব্যাস শুরুটা এই ভাবেই কতকটা যেন রূপকথার গল্পের মতো। যদিও গল্প বাস্তব থেকেই সৃষ্টি হয়।
এরপর আরণ্যক নাট্য দলের কর্মী হিসেবেই তাঁকে দেখা যায় একাধিক নাটকে অভিনয় করতে । কিন্তু কিছুতেই যেন টেলিভিশনের পর্দায় হোক বা সিনেমার লাইন লাইটে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। অবশেষে একদিন এলো সেই সুবর্ণ সুযোগ মুঠোফোনের এক কোম্পানির বিজ্ঞাপনে প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায় চঞ্চল চৌধুরীকে। ব্যস গেলো জীবনের মোড় ঘুরে। আসলে কখন যে কোন মুহূর্তে কার জীবনে ঘুরে যায় কেউই টের পান না। চঞ্চলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। যদিও তার জন্য চাই অনেক ধৈর্য, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের। চঞ্চলের নিজের কথায়, মেধা – সিনশিয়ারিটি – পরিশ্রমী হলে কোনদিন জীবনে কেউ ব্যর্থ হতে পারে না।
বড়পর্দায় চঞ্চল চৌধুরীর পদার্পণ
বড়ো পর্দায় চঞ্চল চৌধুরীর প্রথম সিনেমা ২০০৬ সালে তৌকির আহমেদ পরিচালিত রূপকথার গল্প। এরপর একের পর এক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছে বাংলাদেশের দর্শকদের। জায়গা করে নিয়েছে সকলের মনে, কুড়িয়ে নিয়েছে মুঠো মুঠো ভালোবাসা। গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘মনপুরা’ (২০০৯) সিনেমায় চঞ্চলের দুর্দান্ত অভিনয় সিনেমাটিকে ব্লকবাস্টার করে দিয়েছিল। শোনা যায়, টানা এক বছর বাংলাদেশের কোন না কোন সিনেমা হলে প্রত্যেকদিন দেখানো হয়েছে এই সিনেমাটি। এরপর অমিতাভ রেজা চৌধুরীর আয়নাবাজি (২০১৬), অনম বিশ্বাসের দেবী (২০১৮) মত বিখ্যাত সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেছে চঞ্চল।
চলুন দেখি, সেরা চঞ্চল চৌধুরীর নাটক লিস্ট। চঞ্চল চৌধুরী ওয়েব সিরিজ লিস্ট। চঞ্চল চৌধুরী-এর সিনেমা এবং টিভি শো।
চঞ্চল চৌধুরী-এর সিনেমা এবং টিভি শো (chanchal chowdhury movies and tv shows)
চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত কয়েকটি বিখ্যাত সিনেমা :
তৌকির আহমেদ পরিচালিত রূপকথার গল্প (২০০৬)
গিয়াসউদ্দিন সেলিমের মনপুরা (২০০৯)
গৌতম ঘোষ পরিচালিত মনের মানুষ (২০১০)
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালিত টেলিভিশন ( ২০১২)
অমিতাভ রেজা চৌধুরীর আয়নাবাজি ( ২০১৬)
অনম বিশ্বাসের দেবী ( ২০১৮)
চঞ্চল চৌধুরী ওয়েব সিরিজ লিস্ট (chanchal chowdhury web series list) :
তাকদীর (২০২০) : হৈচৈ
চুক্তি ( ২০২১): জী ফাইভ
জাগো বাহে (২০২১): চরকি
মহিলা ভাদ্র (২০২১) : জী ফাইভ
বলি (২০২১) : হৈচৈ
কারাগার ( ২০২২) : হৈচৈ
ওভার ট্রাম্প (২০২৩) : চরকি
চঞ্চল চৌধুরীর নাটক লিস্ট (Chanchal Chowdhury natok list) :
শংক্রান্তি (১৯৯৮),
প্রাকৃত জনের কথা (১৯৯৯)
ওরা কদম আলী (২০০০)
ময়ূর সিংহসন , গানক্রান্তি (২০০৩
শুধু তাই নয় এপার বাংলার অন্যতম সেরা পরিচালক গৌতম ঘোষের মনের মানুষ সিনেমাতেও তাকে ফাটি অভিনয় করতে দেখা যায়। চঞ্চল তাঁর পরিশ্রম তাঁর অভিনয়ের গুণে জয় করে নিয়েছে হাজারো ভক্তের মন। যদিও চঞ্চল এক সাক্ষাৎকার বলেছে, কোনদিনই টেলিভিশনের পর্দায় সিনেমা করবে একথা সে ভাবেনি।
তবে চঞ্চল চৌধুরী খুব খুঁতখুতে মানুষ সমস্ত সিনেমায় সমস্ত চরিত্রে অভিনয় করে না। কোন পরিচালকের সিনেমা, কোন চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, কারা কারা তার সহ অভিনেতা অভিনেত্রী সবটা দেখেই তিনি সিদ্ধান্ত নেয় সেই সিনেমায় অভিনয় করবে কিনা। কিন্তু এতসব কিছুর পরেও এই প্রতিভাবান অভিনেতার প্রতিভা কিন্তু সুপ্ত থাকেনি বরং প্রকাশিত হয়েছে প্রত্যেক সিনেমার মধ্য দিয়ে।
কলকাতায় hoichoi -এ চঞ্চল চৌধুরীর হইচই
চঞ্চল চৌধুরী-এর সিনেমা এবং টিভি শো এবং চঞ্চল চৌধুরীর নাটকের লিস্ট শুধু বাংলাদেশেই সীমিত নয়। কেবল মঞ্চ নয় টেলিভিশন, সিনেমা, এমনকি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কাঁপিয়ে অভিনয় করছে চঞ্চল। কলকাতায় বিভিন্ন মঞ্চে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। ভারতের জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম হৈচৈ এ মুক্তি পেয়েছে তাঁর কারাগার।
এই ওয়েব সিরিজের মধ্য দিয়ে চঞ্চলের জনপ্রিয়তা আরো দ্বিগুণ হয়েছে। তবে এতসব কিছুর পরেও মঞ্চেই অভিনয় করতে ভালোবাসে চঞ্চল। সে নিজে জানিয়েছে, “আমি মঞ্চটাকে খুব মিস করি, মঞ্চে আবার ফিরব, যতদিন বাঁচবো মঞ্চে অভিনয় করবো, আমার জীবনের শেষ ঠিকানাই হবে আমার মঞ্চ।”
চঞ্চল চৌধুরীর আগামী দুটি ঐতিহ্যবাহী সিনেমা
সে এমন একজন রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি যে নিজের পরিশ্রম, প্রতিভা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সন্ধিহান নয়।এবার তাঁকেই দেখা যাবে মৃণাল সেনের বায়োপিকে। আসতে চলেছে সৃজিৎ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত মৃণাল সেনের বায়োপিক পদাতিক, যেখানে মুখ্য চরিত্রে অর্থাৎ মৃণালের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যাবে চঞ্চলকে। সৃজিত জানিয়েছেন, কাকতালীয়ভাবে মৃণালের সঙ্গে চঞ্চলের চেহারায় এক অদ্ভুত মিল আছে যার জন্য চঞ্চলকে বেছে নিয়েছেন তিনি, আর তাঁর অভিনয় সম্পর্কে তো কিছু বলারই থাকে না।
শুধু মৃণাল নয় বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের বায়োপিকেও অভিনয়ে করেছে চঞ্চল। দক্ষিণ পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ছবি ‘মুজিব: দ্য মেকিং অফ আ নেশন ‘ এই ছবিটি যদিও এখনও মুক্তি পায়নি তবে জানা গেছে, তাঁকে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধুর বাবার চরিত্রে অভিনয় করতে।
বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী চঞ্চল। তাঁর মতে, বাংলাদেশের মানুষের সহজ সরল জীবন ও প্রতিভা বাংলাদেশকে একদিন আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ‘চোরকি’ নিয়েও তিনি বেশ আশাবাদী।
তবে এই অভিনয় প্রেমী মানুষটির আজকের সুনাম খ্যাতি সবকিছুর পেছনে তার স্ত্রীর কম ভূমিকা নেই। চঞ্চল পত্নী হলেন শান্তা চৌধুরী। সে পেশায় একজন ডাক্তার। অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য চঞ্চল তাঁর নিজের পরিবারকে ঠিক সময় না দিতে পারলেও তাঁর স্ত্রী সবটা দেখে শুনে নেয়, গুছিয়ে রাখে আর তাঁর জন্যই চঞ্চল নিজের সবটা দিয়ে অভিনয়টা করে।
চঞ্চলের ভক্তকুলের শেষ নেই। সে ভক্তদের মধ্যে আবার অনেকেই নানা ধরনের ছবি তাঁকে এঁকে পাঠায়, যা চঞ্চল সংগ্রহও করে রাখে। এমনকি সেই ছবি গুলো নিয়ে একটা এক্সিবিশন করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে। এক সাক্ষাৎকারে চঞ্চল জানায়, আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা নিজেদের সময় খরচ করে আমাকে এত ভালবাসা দান করেন।” ভালো থাকুন স্যার, পরবর্তী ছবির জন্য রইল আগাম শুভেচ্ছা।
আরও পড়ুন :
হিরো আলম সালমান খান থেকেও বেশি ? (Hero Alom Net Worth)
99% মানুষ জানে না সালমান খানের স্ত্রী কে?( Salman Khan Wife )
শাহরুখ খান কত টাকার মালিক জানেন কি? (Shahrukh Khan Net Worth)