Hero Alom Net Worth:হিরো আলম সালমান খান থেকেও জনপ্রিয়, বাংলাদেশের সুপারস্টার কে হিরো আলম? হিরো আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা?
আজ আমরা জানবো কে এই হিরো আলম? হিরো আলমের জীবন বৃত্তান্ত ও হিরো আলমের জীবন কাহিনী। হিরো আলমের সম্পদের পরিমান কত?হিরো আলমের মাসিক আয় কত ?হিরো আলমের বাড়ি কোথায়? হিরো আলমের মোবাইল নাম্বার। হিরো আলমের উচ্চতা কত?
আশরাফুল আলম সাঈদ তার প্রকৃত নাম হলেও হিরো আলম নামেই সে পরিচিত সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাংলাদেশের এই গায়ক, অভিনেতা, রাজনীতিবিদকে সব সময় দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে।
- পুরো নাম :- আশরাফুল আলম সাঈদ
- জন্ম:- ২০ জানুয়ারি ১৯৮৫ বগুড়া জেলা, বাংলাদেশ
- অন্য নাম :- হিরো আলম
- উচ্চতা :- ১.৬ M (5 ফিট 2.992 ইঞ্চেস)
- জাতীয়তা :- বাংলাদেশি
- ধর্ম :- ইসলাম
- পেশা :- কমেডিয়ান, অভিনেতা, গায়ক, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী
- বিবাহিত জীবন :- প্রথম-সাবিহা আক্তার সুমি (বি. ২০১০)
দ্বিতীয়- নুসরাত জাহান জিমু (বি. ২০১৯; বিচ্ছেদ, ২০২২) - বই :- “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো” (২০১৯)
- নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা :- ১) ২০১৮ -এর বাংলাদেশ সাধারণ নির্বাচন [মনোনয়ন বাতিল]
২) ২০২৩ -এর বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৪ উপনির্বাচন [পরাজিত]
৩) ২০২৩ ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন [পরাজিত] - নেটওয়ার্থ :- প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার (২০২৩ অনুযায়ী)
- কর্মজীবন :- ২০১৬-বর্তমান
- যোগাযোগ মাধ্যম :- ফেসবুক [ক্লিক করুন]
( হিরো আলমের মোবাইল নাম্বার তার নিজস্ব গোপনীয়তার ব্যাপার। কিন্তু কেউ যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। )
হিরো আলমের জীবন কাহিনী
কে এই হিরো আলম? বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় জন্ম হিরো আলমের। তার বর্তমান বয়স ৩৮ বছর। তবে জানলে অবাক হতে হয়, আজকের ওই হাস্যরসাত্মক ও মিমে পরিণত হওয়া হিরো আলমের জীবনটা বাস্তবে বেশ ট্রাজেডির। আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় হিরো আলম তার নিজের পরিবার নয়, আব্দুর রাজ্জাকের (পালক বাবা) পরিবারে বেড়ে ওঠে।
হিরো আলম নামটার সঙ্গে পরিচয় নেই এমন মানুষকে পাওয়া কিন্তু বেশ মুশকিল। নিশ্চয়ই একবার হলেও তার বেসুর গলার গান শুনেছ। কিন্তু সব সময় সমালোচনার শীর্ষে থাকা এই ব্যক্তি কত টাকার মালিক জানো? হিরো আলমের মাসিক আয় শুনলে তোমার চোখও কপালে উঠতে বাধ্য। তবে চলো দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।
হিরো আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা
২০১৯ সালে ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলম জানান, পারিবারিকভাবে আর্থিকভাবে পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য সপ্তম শ্রেণির পর স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। শুরুতে সিডি বিক্রি করত হিরো আলম। তারপর শুরু করে কেবল অপারেটরের ব্যবসা। এই ব্যবসা করতে গিয়েই নিজের ইচ্ছাতেই অনেক গানের ভিডিও তৈরি করে সে। এরপর তার নিজের ইউটিইউব চ্যানেলের মাধ্যমে সেই গানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিলে তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তারপর রাতারাতি বাড়তে থাকে হিরো আলমের ফলোয়ার্স, সে হয়ে যায় সেলিব্রিটি।
রাতারাতি বাংলাদেশের সুপারস্টার হিরো – হিরো আলম
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ফেসবুকের পেজেও বিপুল জনপ্রিয়তা হিরো আলমের। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যাওয়া এই মানুষটিকে জানতে চাই সকলেই, রিপোর্ট বলছে, ২০১৮ সালে বলিউড ভাইজান সালমান খানের থেকেও হিরো আলমের নাম গুগলে বেশি সার্চ করতে দেখা গেছে। এখন শুধু বাংলাদেশ নয় ভারতবর্ষ এমন কি বিদেশের মাটিতেও তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা।
হিরো আলমের প্রথম গান ছিল ‘বাবু খাইছো’ । এই গানের মধ্যে দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুলভাবে ভাইরাল হয়ে যায় হিরো আলম । এরপর কিছু রবীন্দ্র সংগীত এবং নজরুলগীতিও তাকে গাইতে দেখা যায়। যদিও সেগুলি বিকৃত করে গাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে থাকে সমাজে নানা অংশ থেকে। শোনা যায় এর জন্য নাকি তাকে বাংলাদেশ পুলিশ ধরেও নিয়ে যায় এবং রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল গীতিকে বিকৃত করে না গাওয়ার মুচলেকা জমা দিলে তবে তাকে ছাড়ে।
শুধু তাই নয়, নানা গানের ভিডিওতে হিরো আলমকে বিভিন্ন ধরনের রংচঙে পোশাকেও দেখা যায়, এমনকি মাঝে মাঝে পুলিশের পোশাকেও। এর জন্য বাংলাদেশ পুলিশের তরফে তাকে অহেতুক পুলিশের পোশাক পড়তে বারণ করে দেওয়া হয়। তবে হিরো আলম অভিযোগ করে, বাংলাদেশ পুলিশ তাঁকে হ্যারস করে, তার চেহারা নিয়ে কটাক্ষ করে, ” নিজের চেহারা আয়নায় দেখেছিস” সহ নানা তির্যক কটুক্তি তাকে করা হয়। এমনকি তার নাম পরিবর্তনের কথাও তাঁকে বলা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে বলে দাবী করে হিরো আলম।
হিরো আলমের জীবন বৃত্তান্ত – জিরো থেকে হিরো
হিরো আলমের পিক বা হিরো আলমের ছবি দেখে বিচার করবেন না। এগুলো সামনে আসতেই শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের মিডিয়াতেও হিরো আলমকে নিয়ে খবর ছাপা হয়। বিবিসি, এএফপি – র মত গণমাধ্যমেও এই নিয়ে খবর প্রকাশ হতে দেখা যায়। শুধু বাংলাদেশ নয়, এপার বাংলাতেও হিরো আলমের যাতায়াত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে হঠাৎই জনপ্রিয় হওয়া গায়িকা রানু মন্ডল এবং কাঁচা বাদাম গানের গায়ক ভুবন বাদ্যকরের সঙ্গেও হিরো আলমকে গান করতে দেখা যায়।
শুধু গান নয় হিরো আলমকে রুপালি পর্দার জগতেও দেখা গেছে। হিরো আলম অভিনীত প্রথম ছবি “মারছক্কা” ২০১৭ তে মুক্তি পাই। ২০২০ সালে দ্বিতীয় ছবি “সাহসী হিরো আলম” মুক্তি পায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। জানা যায়, এই ছবিটি হিরো আলম নিজে প্রযোজনা করছে। এমনকি তার জীবন নিয়ে নির্মিত হাস্যরসাত্মক নাটকও মঞ্চস্থ হয়েছে ২০১৯ সালে আমেদাবাদে ও মুম্বাইয়ের নানা জায়গায়।
এছাড়াও বেশ কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতেও হিরো আলমকে দেখা যায়, তার মধ্যে কিছু ছবি হলো:
বাদাম ভালোবাসা, হিংস্র বাঘ, বরিশাইল্লা বউ, হিরো এখন জিরো, মা বড় না বউ বড়, আলম দালাল , মায়ের প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি।
হিরো আলমের মাসিক আয় কত
তবে সর্বদা সমালোচিত হওয়ায় হিরো আলমের মাসিক আয় জানলে অবাক হবে। ফেসবুকে একটি জনপ্রিয় ফ্যান পেজ রয়েছে তার । এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মূলত হিরো আলমের উপার্জনের রাস্তা। শোনা যায়, এক একটি গানের ভিডিও থেকে হিরো আলম উপার্জন করে কখনো ৫০ হাজার, হিরো আলমের মাসিক আয় কখনো ১ লাখ আবার কখনো ৩ লাখ টাকা।
শুধু গান বা অভিনয় নয় তাকে দেখা যায় স্টেজ পারফরম্যান্স করতে। আবার বিজ্ঞাপনেরও এক জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছে হিরো আলম। জানা গেছে, এক একটি স্টেজ পারফরম্যান্স করতে হিরো আলম ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে। আবার বিজ্ঞাপনের জন্য নিয়ে থাকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
এইসব মিলিয়ে হিরো আলমের বাৎসরিক আয় প্রায় ২ কোটি টাকা। ঢাকায় হিরো আলমের রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি এবং গাড়ি। ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ও ইনভেসমেন্টও নেহাত কম নয়। শোনা যায়, তার বাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য ২ কোটি টাকা ( বাংলাদেশের মুদ্রার হিসাবে) ।
হিরো আলম কত টাকার মালিক (Hero Alom Net Worth)
অক্টোবর ২০২৩ সালের হিসাবে হিরো আলমের নেটওয়ার্থ প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হয়। হিরো আলম বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।
ইউটিউব ও ফেসবুক : হিরো আলমের ইউটিউবে ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে এবং তার ভিডিওগুলি ভিউজ ২৭ কোটিরও বেশি। তিনি বিজ্ঞাপন এবং স্পনসরশিপের মাধ্যমে ইউটিউব থেকে অর্থ আয় করেন।
অভিনয় এবং গান: আলম বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী সিনেমা এবং মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। তিনি লাইভ পারফরম্যান্স থেকেও অর্থ আয় করেন।
ব্যবসা: হিরো আলমের একটি প্রযোজনা সংস্থা এবং একটি পোশাকের দোকান রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আলমের নেটওয়ার্থ তথা সম্পত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে, তিনি তার নেটওয়ার্থ প্রায় ১০,০০০ ডলার বলে অনুমান করেছিলেন। তবে, তখন থেকে তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়েছে, এবং তিনি তার খ্যাতি কাজে লাগিয়ে বেশ মত রকম আয় করতে পেরেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে হিরো আলমের নেটওয়ার্থ এটি একটি অনুমানিক মাত্রা কারণ তার কোনো সরকারি মাত্রা প্রকাশ্যে নেই তাই তার সম্পদের সঠিক পরিমাণ যাচাই করা কঠিন।
হিরো আলমের বই – ” দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে হিরো আলম “
হিরো আলম ২০১৯ সালে দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো নামে একটি বই লিখেছেন। বইটি একটি আত্মজীবনী যেখানে হিরো আলম তার জীবন এবং কর্মজীবন সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি তার বিনীত সূচনা, সফলতা অর্জনের তার সংগ্রাম এবং ভবিষ্যতের জন্য তার পরিকল্পনা সম্পর্কে লিখেছেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে তার চিন্তাধারাও শেয়ার করেছেন।
হিরো আলমের বইটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয় এবং বাংলাদেশে বেস্টসেলার হয়। এটি ২০২০ সালে ভারতে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয় এবং প্রকাশিত হয়।
সমালোচনা সত্ত্বেও, হিরো আলমের বইটি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে পঠিত এবং আলোচিত হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে হিরো আলম জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, এবং তার বই বাংলাদেশী সংস্কৃতিতে তার প্রভাবের প্রতিফলন।
এখানেই শেষ নয়, শোনা যায় সম্প্রতি হিরো আলমের একটি ভাস্কর্য বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে তৈরি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভাস্কর্যের সঙ্গে নিজস্বী তুলে হিরো আলম নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্ট করে। এছাড়া ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় হিরো আলমের আত্মজীবনী “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজ বদলে দেবো”। বাংলাদেশের একুশে বইমেলায় এই বইটি প্রকাশিত হয়। জানা যায়, বইটি বিপুল পরিমাণে বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশে। আবার ওই বই থেকেও প্রায় ৮ লাখ টাকা উপার্জন করেন হিরো আলম।
এটা উল্লেখ্য যে হিরো আলম বাংলাদেশে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি তার অনন্য এবং অপ্রচলিত স্টাইলের জন্য পরিচিত এবং তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রায়শই অসাধারণ বলে বিবেচনা করা হয়। নির্বাচনী রাজনীতিতে তার সাফল্যের অভাব সত্ত্বেও, হিরো আলম বাংলাদেশী সংস্কৃতিতে একজন জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে গেছেন।