Anirban Bhattacharya wife:জানতে চান, অনির্বাণ ভট্টাচর্য্যের স্ত্রী, উচ্চতা, বয়স, মুভিজ ও ওয়েব সিরিজ সম্পর্কে? এই আর্টিকেল এ অনির্বাণের সব তথ্যই পাবেন।
নাম: অনির্বাণ ভট্টাচার্য |
ডাকনাম: বনি |
পিতামাতার নাম:- অজানা |
জন্মদিন: ১০ অক্টোবর, ১৯৮৪ |
anirban bhattacharya age /বয়স: ৩৭ (২০২৩-১১-১০ অনুযায়ী) |
জন্মস্থান: পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
ধর্ম : হিন্দু |
wife/ স্ত্রী: মধুরিমা গোস্বামী |
anirban bhattacharya height / উচ্চতা: ৫’১১” |
শিক্ষাগত যোগ্যতা : রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাট্যকলায় স্নাতকোত্তর |
পেশা : অভিনেতা, নাট্য অভিনেতা, গায়ক এবং পরিচালক |
সক্রিয় বছর: ২০১০ – বর্তমান |
১৯৮৬ সালের ৭ অক্টোবর মেদিনীপুরের বিধাননগরে এক বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তাঁর । গ্রামের আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মতোই বেড়ে ওঠা তাঁর ।সে পড়াশোনা শেষ করে মেদিনীপুর নির্মল হৃদয় আশ্রম ক্যাথলিক চার্চ হাইস্কুলে থেকে। এরপর ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে পাড়ি দেয় কলকাতায় স্নাতক ডিগ্রির জন্য। কলকাতা রবীন্দ্রভারতী থেকে অনির্বাণ স্নাতক ও থিয়েটার নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে।
তবে অনির্বাণ এক সাক্ষাৎকারে জানায় ছেলেবেলা থেকে তার খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন ছিলো । ছোটবেলায় মাঠে ফুটবল খেলার সময় যেদিন একটা গোল দিত বা ক্রিকেট খেলার সময় একটা ছক্কা মারতো সেইদিনই ভাবতো বড়ো হয়ে একদিন ফুটবলার অথবা ক্রিকেটার হবে সে। তাহলে আজ সেই অনির্বাণ ফুটবল বা ক্রিকেট ব্যাট ছেড়ে সিনেমা বা থিয়েটারে লাইম লাইটের নীচে কেন? খেলোয়াড় না হয়ে অভিনেতা বা পরিচালক কেন?
এবার আসা যাক সেই কাহিনীতেই –
যে গ্রামে অনির্বাণ বেড়ে উঠেছে সেখানে ছেলেবেলা থেকে যাত্রাপালা হতে দেখেছে, আবার কখনও নিজে কিছু চরিত্রে অভিনয়ও করেছে। তবে সেইভাবে প্রশিক্ষণ তাঁর ছিল না। কলকাতায় কলেজে ভর্তি হওয়ার পর নিজের হাত খরচ চালাতে অনির্বাণ যোগ দেয় থিয়েটারে। তারপরে আস্তে আস্তে থিয়েটারের প্রতি তাঁর ভালোবাসা জন্মায়। কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের পর এই অভিনেতা সিদ্ধান্ত নেয় থিয়েটার জগতেই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবে। ব্যস শুরু হয় তাঁর এক নতুন জার্নি।
মধুরিমা গোস্বামী: anirban bhattacharya wife
মধুরিমা গোস্বামী একজন বাঙালি অভিনেত্রী পাশাপশি একজন নাট্যশিল্পীও । তাঁকে দেবী সর্পমস্তা, অ্যান্টনি সৌদামিনী এবং নাগমন্দলা এর মতো নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। এই মধুরিমা জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের স্ত্রী।
মধুরিমা এবং অনির্বাণের পরিচয় কলেজ দিনের সময় থেকে।এই ভাবেই বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। এই বন্ধুত্ব আর প্রেম পায় নতুন পরিচয় ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর। madhurima goswami anirban bhattacharya বিয়ে করে কোভিডকালে । এইদম্পতি একে অপরের ক্যারিয়ারের প্রতি খুবই সমর্থনশীল এবং তাঁদের নিজেদের প্রজেক্টেও একে অপরকে সহযোগিতা করতেও দেখা গেছে।
নাটকের পাশাপাশি, মধুরিমা কয়েকটি বাঙালি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন শোতেও অভিনয় করেছে। দুর্দান্ত অভিনয়শৈলী এবং জটিল চরিত্রগুলিকে নিখুঁতভাবে পর্দায় উপস্থাপনা দেখেই বোঝা যায়, তাঁর অভিনয় ক্ষমতা সম্পর্কে।
২০২৩ সালে, তার স্বামী অনির্বাণের পরিচালিত বাংলা ছবি বল্লভপুরের রূপকথায় মধুরিমাকে অভিনয় করতেও দেখা যায়। এই ছবি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে এবং মধুরিমার অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে দর্শক মহলে। মধুরিমা একজন প্রতিভাবান এবং বহুমুখী অভিনেত্রী যার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। তাঁদের একে অপরের প্রতি সম্মান, কাজের প্রতি সম্মান দেখেই অনেকেই তাই বলছেন তাঁরা made for each other। এই মুহূর্তে বাঙালি বিনোদন শিল্পের অন্যতম জনপ্রিয় দম্পতি অনির্বাণ – মধুরিমা।
Anirban bhattacharya spouse, মধুরিমা গোস্বামীর উল্লেখযোগ্য কাজগুলি এখানে দেওয়া হল:
* নাটক: দেবী সাপমাষ্টা, অ্যান্টনি সৌদামিনী, নাগমন্দলা, অভ্যয় শেষ রায়নি, অথৈ
* চলচ্চিত্র:বলভপুরের রূপকথা, এক যে ছিল রাজা, গুমনামা, দ্বিতীয় পুরুষ
* টেলিভিশন শো:কনে বউ কথা বলে, এই মন মানে না, সা রে গা মা পা বাংলা
মধুরিমা গোস্বামী বাঙালি বিনোদন শিল্পের একজন উদীয়মান তারকা। তিনি তার প্রতিভা, বহুমুখিতা এবং তার পেশার প্রতি নিষ্ঠার জন্য পরিচিত।
এরপর থিয়েটার করার পাশাপাশি থিয়েটার পরিচালনা শুরু করে অনির্বাণ ভট্টাচার্য। আসতে আসতে তার অভিনয়ের দক্ষতা দেখে ডাক আস্তে থাকলো সিনেমা জগত থেকে। শুধু বাংলা নয় বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা পরিচালক অপর্ণা সেনের ‘আরশিনগর ‘ সিনেমায় এক পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে বাঙালি দর্শককে মুগ্ধ করে অনির্বাণ। তারপর তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার জীবন যেন এইরকমই একটা মোড়ের অপেক্ষায় ছিল। এরপর একের পর এক সুপারহিট ছবিতে তাকে অভিনয় করতে দেখা যায়। এছাড়া ওয়েব সিরিজ -টেলিভিশন – ফিল্মগ্রাফি এমনকি গায়ক হিসেবেও দেখা গেছে অনির্বাণকে।
(anirban bhattacharya movies and tv shows)
থিয়েটার:
অনির্বাণের জীবনে ধ্যানজ্ঞান সবটাই থিয়েটার কেন্দ্রীক। থিয়েটারে অভিনয় দিয়েই তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। ২০১৩ সালে গিরিশ কার্নাডের নাগামন্ডলা নাটক তাকে ব্যাপক খ্যাতি এনে দেয়। তবে ২০১০ সালে থেকে অনির্বাণ সঙ্ঘরাম হাতিবাগান নামের একটি নিজস্ব থিয়েটার গ্রুপও শুরু করে। সেখান থেকেই প্রথম সে নাটকের পরিচালনা শুরু করে। তার অভিনীত কয়েকটি থিয়েটার হল-
বিজলীবালা-আর মুক্তি (২০০৫ ), দূর বাজে ( ২০০৭), অমর আত্মহত্যা কালীন জবানবন্দি (২০০৯), রাজা লিয়ার ( শেক্সপিয়ারের রাজা লিয়ার, ২০১০), দেবী সর্পমস্তা (২০১১), চন্দ্রগুপ্ত (২০১২), টিনের কন্যা (২০১৩), অ্যান্টনি সৌদামিনী (২০১৩), ছায়াবাজি (২০১৪) , যারা আগুন লাগায়(২০১৪) , বিসর্জন (২০১৪), ইচ্ছার অলি গলি (২০১৫) , এফ এম মহানগর (২০১৫), তিতুমীর ( ২০১৯), ঘরে বাইরে (২০২২)।
টেলিভিশন:
এভাবেই একের পর মঞ্চ কাঁপানো নাটকে অভিনয় করার সময় ২০১৫ সালে টেলিভিশন থেকে তাঁর ডাক আসে। জি বাংলা অরিজিনালসের হাত ধরে টেলিভিশনের পর্দায় প্রবেশ করে অনির্বাণ। ‘কাদের কুলের বউ’ নামে এক টেলিফিল্মে তার প্রথম অভিনয় সকলকে মুগ্ধ করে। এরপর আবার ‘যদি বলো হ্যাঁ’, ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ টেলিফিল্মেও অনির্বাণকে দেখা যায়। এই সুন্দর চেহারার , মিষ্টি হাসির ব্যক্তিটিকে খুব সহজেই আপন করে নেয় আপামর বাঙালি। শুধু টেলিফিল্ম নয় টেলিভিশন টকশোতেও শ্বাশত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনির্বাণকে দেখা যায় অপুর সংসারে। এমনকি কালার্স বাংলায় ‘হুঁশিয়ার বাংলা’ নামে এক ক্রাইম শোতেও সঞ্চালক রূপ অনির্বাণ কাজ করে। আবার স্টার জলসাতেও ‘ভূমিকন্যা’ টেলিফিল্মে অভিনয় করে অনির্বাণ।
Anirban bhattacharya movies
সিনেমা :
সিনেমার পর্দাতে তাকে প্রথম ব্রেক দেন অপর্ণা সেন। ২০১৫ সালে অপর্ণা সেনের পরিচালনায় ‘আরশিনগর’ ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে দাগ কাটে। এর পরের বছরই অনির্বাণকে দেখা যায় অরিন্দম শীলের ‘ঈগলের চোখ’ ছবিতে।২০১৬ তে অরিন্দম পরিচালিত ঈগলের চোখ’ ছবিতে একদম অন্যরকম একটি চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে হিট হয়েছিল অনির্বাণ। এই ছবি থেকেই দর্শক তাকে চিনতে শুরু করে। এই ছবিতে তাঁর অভিনয়ের জন্য তাকে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও দেওয়া হয়। ব্যস আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এই ভাবেই বিভিন্ন ছবিতে অসাধারণ অভিনয় দিয়ে ধীরে ধীরে ক্রমশ টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠে অনির্বাণ। তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য বাংলা সুপার হিট ছবি। করোনার বছরেও মুক্তি পেয়েছিল ‘ড্রাকুলা স্যার’ সেখানেও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করে নেয়।
anirban bhattacharya movie list
উমা ( ২০১৮)
এক যে ছিল রাজা ( ২০১৮)
বিবাহ অভিযান ( ২০১৯)
গুমনামি ( ২০১৯)
দ্বিতীয় পুরুষ ( ২০২০)
মুখোশ (২০২১)
গোলন্দাজ( ২০২১)
আবার বিবাহ অভিযান ( ২০২৩)
anirban bhattacharya new movie
সম্প্রতি তাকে দেখা যাবে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত দশম অবতার সিনেমাটিতে। এই ছবিতে অনির্বাণের বিপরীতে রয়েছে টলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী জয়া আহসান। আগেই রিলিজ হয়েছে ছবির প্রোমো, আগামী ১৯ অক্টোবর দুর্গাপুজোর মহাষষ্ঠীতে রিলিজ হতে চলেছে দশম অবতার। টেলিভিশন ও সিনেমার পাশাপাশি অনির্বাণ সমান তালে থিয়েটারেও অভিনয় করে যাচ্ছে। থিয়েটারের অভিনয় সে ছাড়েনি ।
anirban bhattacharya webseries
ওয়েব সিরিজ: টেলিভিশন, সিনেমার পাশাপাশি অনির্বাণ পা রাখে ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও। তার প্রথম ওয়েব সিরিজ ব্যোমকেশ বক্সী। ২০১৭ সালে পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল ও সৌমিক চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ওয়েব দুনিয়ায় পা রাখে অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এই সিরিজের প্রথম সিজনেই নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকের মন জয় করে নেয় অনির্বাণ। এমনও বলতে শোনা গেছে, ব্যোমকেশ ওয়েব সিরিজ অনির্বাণকে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ খ্যাতি এনে দিয়েছে। ব্যোমকেশ ছাড়াও অনির্বাণ আরো অনেকগুলি ওয়েব সিরিজের কাজ করেছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি হলো
ল্যাবরেটরি (২০১৮)
মানভঞ্জন (২০১৯)
পাঁচফোড়ন (২০১৯)
অনির্বাণ সব রকম চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার যে আপ্রাণ চেষ্টা করছে সেটা বোঝা যায় তার করা চরিত্র গুলি দেখেই। এবার এপার বাংলার ব্যোমকেশ পাড়ি দিচ্ছে ওপার বাংলাতেও। ওয়েব সিরিজ মহানগর থ্রি তে অনির্বাণকে দেখা যাবে এমনটা শোনা যাচ্ছিল।এখন সেই জল্পনাতেই সিলমোহর দেয় অনির্বাণ নিজেই। মহানগর ওয়েব সিরিজের পরিচালক সঙ্গে সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে।
পরিচালক হিসেবে অনির্বাণ: ‘অভিনয়টাই আমার পেশা,’ বলা এই অভিনেতা এখন একজন সফল ও দক্ষ পরিচালকও। তাঁর পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘বল্লভপুরের রূপকথা’, মুক্তি পেয়েছে গত বছর ২৫ অক্টোবর । বাদল সরকারের বিখ্যাত নাটক ছিল এই ছবির ভিত। হরর কমেডি এই ছবি দর্শক মহলে বেশ সাড়া ফেলে দেয়। পরিচালক হিসেবে অনির্বাণ এই ছবির জন্য পুরস্কারও পান।
গায়ক হিসেবে অনির্বাণ: শুধু অভিনেতা বা পরিচালক নয় অনির্বাণের আরো একটা পরিচয় আছে । অনির্বাণ খুব ভালো একজন গায়ক, যদিও তার এই পরিচয়টা অনেকেরই অজানা। সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছবিতে “কিচ্ছু চাইনি আমি” গানটা অনির্বাণের গলায় রেকর্ড করা। কি এটা জানা ছিল না নিশ্চয়ই। ‘ড্রাকুলা স্যার’ ছবিতে “প্রিয়তমা” গানটিও অনির্বাণ গেয়েছে।